
সৌর বিদ্যুত সম্পর্কে কম বেশি সবাই আমরা জানি। কিন্তু এই সিস্টেম এর জন্য সোলার প্যানেল, চার্জ কন্ট্রোলার, ব্যাটারি কিভাবে নিতে হবে সেটা আমরা অনেকেই জানি না। তাই আজকে আমি এই বিষয়ে একটা লিখা পোস্ট করছি। এই লিখাটা অনেক আগেই আমি ইংলিশে লিখেছিলাম, আজকে শুধু মাত্র বঙ্গানুবাদ করছি। আমি এখানে ডিসি সোলার সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করব।
সোলার প্যানেল এ P-N জাংশন থাকে। এই জাংশনে আলো আসলে তখন বিদ্যুত উৎপন্ন হয়। যাই হোক এই P-N জাংশনে কিভাবে বিদ্যুত উৎপন্ন হয় সেটা আজকের বিষয় না।
সোলার সিস্টেম এ মূলত ৪টা উপাদান থাকে।
১। সোলার প্যানেলঃ যেখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।
২। চার্জ কন্ট্রোলারঃ এটা ব্যাটারি এর চার্জ কে কন্ট্রোল করে। ব্যাটারি ফুল চার্জ হয়ে গেলে, চার্জ করা বন্ধ করে দেয়। আবার চার্জ শেষ হয়ে গেলে ব্যাটারি থেকে লোডকে ডিস-কানেক্ট করে দেয়। এইভাবে ব্যাটারিকে সুরক্ষিত রাখে।
৩। ব্যাটারিঃ এটা বিদ্যুতকে সঞ্চয় করে রাখে।
৪। লোডঃ লোড বলতে আমরা যা ব্যবহার করি- লাইট, ফ্যান, মোবাইল চার্জার।
সোলার প্যানেলঃ এটা এমন একটা যন্ত্র যেটা, সরাসরি আলো শক্তিকে বিদ্যুত শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারে। এর থেকে D.C বিদ্যুত পাওয়া যায়। সোলার প্যানেল সাধারণত ৬, ১২, ২৪, ৪৮ ভোল্ট এর হয়ে থাকে।
সোলার প্যানেল এর বেশ কিছু সাধারণ টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন থাকে , যেমনঃ
1. Maximum Power: এর মানে হচ্ছে এই সোলার প্যানেলটি সর্বোচ্চ ২০ ওয়াট বিদ্যুত দ্বিতে পারবে।
2. Maximum Voltage: এর মানে হচ্ছে এটার সর্বোচ্চ ভোল্টেজ ১৭.৬ । যখন লোড এ দেওয়া হয়।
3. Open Circuit Voltage: সোলার প্যানেলে যখন কোন লোড দেওয়া হয় না, তখন যে ভোল্টাজ পাওয়া যায়। এটাকে সাংকেতিক ভাবে Voc লিখা হয়।
4. Maximum Current: এর মানে হচ্ছে, এখান থেকে সর্বোচ্চ যে কারেন্ট পাওয়া যাবে। এমন কোন লোড লাগানো উচিৎ না যেটার কারেন্ট Maximum Current এর চেয়ে বেশি হয়।
5. Short Circuit Current: এর মানে হচ্ছে, যখন সোলার প্যানেলকে সর্ট করা হয়, তখন যে কারেন্ট পাওয়া যায়।
6. Maximum System Voltage: এর মানে হচ্ছে, যখন সোলার প্যানেলকে সিরিজে যুক্ত করা হয়, তখন এর ভোল্টেজ সর্বোচ্চ Maximum System Voltage এর চেয়ে বেশি না হয়। এখানে সর্বোচ্চ ভোল্টেজ ৬০০। তার মানে (৬০০/১৭) = ৩৫ টা প্যানেল সিরিজে যুক্ত করা যাবে।
এখন আসা যাক, সোলার সিস্টেম এর হিসাব নিয়ে।
ধরা যাক, কোন একজন ২ টা বাতি (১০ ওয়াট), ১ টা ফ্যান (২০ ওয়াট) চালাবে। ব্যাক আপ দ্বিতে হবে ৪ ঘণ্টা
তাহলে, ২টা বাতি - ১০*২= ২০ ওয়াট
১টা ফ্যান = ২০ ওয়াট
মোট = ৪০ ওয়াট
৪ ঘণ্টা ব্যাক আপ- (৪০*৪) = ১৬০ ওয়াট/ আওয়ার
তাহলে ব্যাটারি লাগবে (১৬০/১২) = ১৩.৩৩ বা ১৪ এম্পিয়ার আওয়ার। *** ব্যাটারি ভোল্টেজ ১২, লোড এর ভোল্টেজ ১২***
এখন সোলার এ সাধারণত লেড এসিড ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। আর লেড এসিড ব্যাটারি এর চার্জিং কারেন্ট সাধারণত ১০% ।
তাহলে ১৪ এম্পিয়ার আওয়ার এর ব্যাটারি এর চার্জিং কারেন্ট ১৪*১০/১০০ = ১.৪ এম্পিয়ার।
সুতরাং ১.৪ এম্পিয়ার কারেন্ট পাওয়ার জন্য যে সোলার প্যানেল টা লাগবে - ১২* ১.৪ = ১৬.৮ ওয়াট
সুতরাং এই সোলার সিস্টেম এর জন্য যা যা লাগবে-
১। সোলার প্যানেল - ২০ ওয়াট। (২০ ওয়াট সোলার পাওয়া যায়)
২। ব্যাটারি - ১২ ভোল্ট, ২০ অ্যাম্পিয়ার আওয়ার। (২০ এম্পিয়ার আওয়ার ব্যাটারি পাওয়া যায়)
৩। চার্জ কন্ট্রোলার - ১২ ভোল্ট ৬ এম্পিয়ার (চার্জিং কারেন্ট ১.৪ এম্পিয়ার, ডিস চার্জিং কারেন্ট (৪০/১২)=৩.৩৩, তাই সর্বোচ্চ কারেন্ট ৩.৩৩ বা ৪ এম্পিয়ার এর বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন চার্জ কন্ট্রোলার নিতে হবে)
আশা করি সবাই বুজতে পারছেন, কিভাবে সোলার সিস্টেম এর হিসাব করতে হয়।